নারীর মর্যাদা এ বিষয়ে কিছু গুরুত্ত পূর্ণ হাদীস - ১ম পর্ব ।
জাহেলিয়াতের যুগে নারীদের
মর্যাদা দেওয়া হয়নি। ইয়াহুদী খৃষ্টানরা
নারীদের মর্যাদা দেয় নি। অমুসলিমরাও নারীদের মূল্যায়ন করেনি। বরং ইসলামই নারীদের যথাযথ মূল্যায়ন করেছে। জাহেলিয়াতের যুগে নারীদের ব্যাপারে মূল্যায়ন করা হয়নি, এব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা
বলেন
, ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺑُﺸِّﺮَ
ﺃَﺣَﺪُﻫُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺄُﻧْﺜَﻰ ﻇَﻞَّ ﻭَﺟْﻬُﻪُ ﻣُﺴْﻮَﺩًّﺍ ﻭَﻫُﻮَ ﻛَﻈِﻴﻢٌ - ﻳَﺘَﻮَﺍﺭَﻯ
ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﻣِﻦْ ﺳُﻮﺀِ ﻣَﺎ ﺑُﺸِّﺮَ ﺑِﻪِ ﺃَﻳُﻤْﺴِﻜُﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﻫُﻮﻥٍ ﺃَﻡْ
ﻳَﺪُﺳُّﻪُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺘُّﺮَﺍﺏِ ﺃَﻟَﺎ ﺳَﺎﺀَ ﻣَﺎ ﻳَﺤْﻜُﻤُﻮﻥَ.
তাদের কাউকেও যখন কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয় তখন তার মুখমন্ডল
কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়। তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়,
তার গ্লানী হেতু সে নিজ সম্প্রদায় হ’তে আত্মগোপন করে; সে চিন্তা করে যে, হীনতা সত্ত্বেও সে তাকে রেখে দিবে, না মাটিতে পুঁতে দিবে। সাবধান! তারা যা সিদ্ধান্ত করে তা কতই না নিকৃষ্ট! (নাহল ৫৮-৫৯)। ﻭَﺇِﺫَﺍ
ﺍﻟْﻤَﻮْﺀُﻭﺩَﺓُ ﺳُﺌِﻠَﺖْ - ﺑِﺄَﻱِّ ﺫَﻧْﺐٍ ﻗُﺘِﻠَﺖْ . যখন জীবমত্ম-প্রথিত
(জীবমত্ম কবর) কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে। কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল? (তাকবীর ৮-৯)। ﻋَﻦ ﺍﻟْﻤُﻐِﻴﺮَﺓِ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ
ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺣَﺮَّﻡَ
ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻋُﻘُﻮﻕَ ﺍﻟْﺄُﻣَّﻬَﺎﺕِ
. মুগীরাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর তোমাদের মাতাদের অবাধ্যতাকে হারাম করেছেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১৫)। বাংলা মিশকাত হা/৪৬৯৮,
পূর্ণ হাদীছ দিতে হবে
ﻋَﻦْ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺑْﻦِ
ﻳَﺰِﻳْﺪَ ﺍﻟْﺠُﻌْﻔِﻲِّ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻧْﻄَﻠَﻘْﺖُ ﺃَﻧَﺎ ﻭَﺃَﺧِﻲْ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮْﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﻨَﺎ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﻥَّ
ﺃُﻣَّﻨَﺎ ﻣُﻠَﻴْﻜَﺔَ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺗَﺼِﻞُ ﺍﻟﺮَّﺣِﻢَ ﻭَﺗَﻘْﺮِﻱ ﺍﻟﻀَّﻴْﻒَ ﻭَﺗَﻔْﻌَﻞُ
ﻭَﺗَﻔْﻌَﻞُ ﻫَﻠَﻜَﺖْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﻓَﻬَﻞْ ﺫَﻟِﻚَ ﻧَﺎﻓِﻌُﻬَﺎ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻗَﺎﻝَ
ﻟَﺎ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﻨَﺎ ﻓَﺈِﻧَّﻬَﺎ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻭَﺃَﺩَﺕْ ﺃُﺧْﺘًﺎ ﻟَﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ
ﻓَﻬَﻞْ ﺫَﻟِﻚَ ﻧَﺎﻓِﻌُﻬَﺎ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻮَﺍﺋِﺪَﺓُ ﻭَﺍﻟْﻤَﻮْﺀُﻭﺩَﺓُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﺗُﺪْﺭِﻙَ ﺍﻟْﻮَﺍﺋِﺪَﺓُ ﺍﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡَ ﻓَﻴَﻌْﻔُﻮَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ -
সালামা ইবনু ইয়াযীদ আল-জু‘ফী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং আমার ভাই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট গেলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আমাদের মাতা মুলাইকা আত্মীয়তার সম্পর্ক রাখতেন, অতিথি সেবা করতেন। এছাড়া অন্যান্য ভাল আমল করতেন। তিনি জাহেলিয়াতের যুগে মারা গেছেন। এসব সৎ আমল তার কোন কাজে আসবে কি? তিনি উত্তরে বললেন, না। আমরা বললাম, তিনি জাহিলিয়াতের যুগে আমাদের এক বোনকে জীবন্ত পুঁতে দিয়েছিলেন, এতে তার কোন ক্ষতি হবে কি? নবী কারীম(সা.) বললেন,
যাকে জীবন্ত দাফন করা হয়েছে এবং যে দাফন করেছে
উভয়েই জাহান্নামে যাবে। তবে পরে ইসলাম গ্রহণ করলে ক্ষমা হবে’ (আহমাদ হা/১৫৮৬৬; ইবনু কাছীর হ/৭১৬৭)।
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ
ﻣَﺴْﻌُﻮْﺩٍ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻟْﻮَﺍﺋِﺪَﺓُ
ﻭَﺍﻟْﻤَﻮْﺀُﻭﺩَﺓُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
- ইবনু মাস‘ঊদ (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, ‘যাকে জীবন্ত দাফন করা
হয়েছে এবং যে দাফন করেছে উভয়েই জাহান্নামী’
(ত্বাবারানী, ইবনু কাছীর হা/৭১৬৮)।
ﻋَﻦْ
ﻋُﻤَﺮَ ﻗَﺎﻝَ ﺟَﺎﺀَ ﻗَﻴْﺲُ ﺑْﻦُ ﻋَﺎﺻِﻢٍ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮْﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ
ﻗَﺎﻝَ :
ﺇِﻧِّﻲْ ﻭَﺃَﺩْﺕُ ﺛَﻤَﺎﻧِﻲَ ﺑَﻨَﺎﺕٍ ﻟِﻲْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﻋْﺘِﻖْ
ﻋَﻦْ ﻛُﻞِّ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٍ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺭَﻗَﺒَﺔً، ﻗُﻠْﺖُ : ﺇِﻧِّﻲْ ﺻَﺎﺣِﺐُ ﺇِﺑِﻞٍ، ﻗَﺎﻝَ :
ﺍِﻫْﺪِ ﺇِﻥْ ﺷِﺌْﺖَ ﻋَﻦْ ﻛُﻞِّ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٍ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ ﺑَﺪَﻧَﺔً
ওমর (রা.) হতে বর্ণিত
আছে যে, কায়েস ইবনু আছিম রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আমি জাহিলিয়াতের যুগে আমার ৮ জন কন্যাকে জীবিত প্রোথিত
করেছি, এখন আমার করণীয় কি? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি প্রত্যেকটি কন্যার
বিনিময়ে একটি করে গোলাম আযাদ করে দাও। তখন কায়েস (রা.) বললেন,
হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আমি তো উটের মালিক। আমি গোলামের মালিক নই। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তাহলে তুমি প্রত্যেকের
জন্য একটি করে উট আল্লাহর নামে কুরবানী করে দাও’ (বাযযার, তাবারানী, ইবনু কাছীর হা/৭১৭১)।
ﻭَﻓِﻰ
ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﻴْﺲُ ﺑْﻦُ ﻋَﺎﺻِﻢٍ ﻭَﺃَﺩَﺕُ ﺛَﻤَﺎﻧِﻲَ ﺑَﻨَﺎﺕٍ ﻟِﻲْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻓِﻰ ﺍَﺧِﺮِﻩِ ﻓَﺎﻫْﺪِ ﺇِﻥْ ﺷِﺌْﺖَ ﻋَﻦْ ﻛُﻞِّ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٍ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ
ﺑَﺪَﻧَﺔً
অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে,
কায়েস ইবনু আছিম বলেন, আমি জাহিলিয়াতের যুগে আমার ৮টি মেয়েকে জীবন্ত প্রোথিত করেছি। নবী করীম(সা.) বললেন,
‘তুমি প্রত্যেকটি মেয়ের বিনিময়ে একটি করে উট
কুরবানী কর’ (ত্বাবারানী, ইবনু কাছীর হা/৭১৭২)। ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ
ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﻝَ ﺟَﺎﺭِﻳَﺘَﻴْﻦِ
ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﺒْﻠُﻐَﺎ ﺟَﺎﺀَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺃَﻧَﺎ ﻭَﻫُﻮَ ﻫَﻜَﺬَﺍ ﻭَﺿَﻢَّ
ﺃَﺻَﺎﺑِﻌَﻪُ - আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যার লালন-পালন করবে তাদের পূর্ণ বয়স্কা হওয়া পর্যন্ত, ক্বিয়ামতের দিন সে আমার সাথে এভাবে আসবে। এ বলে তিনি নিজের আঙ্গুলিসমূহ একত্রিত করে দেখালেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৫০)
ﻋَﻦْ
ﻋُﻘْﺒَﺔَ ﺑْﻦِ ﻋَﺎﻣِﺮٍ ﻳَﻘُﻮْﻝُ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻳَﻘُﻮْﻝُ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪُ ﺛَﻠَﺎﺙُ
ﺑَﻨَﺎﺕٍ ﻓَﺼَﺒَﺮَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻦَّ ﻭَﺃَﻃْﻌَﻤَﻬُﻦَّ ﻭَﺳَﻘَﺎﻫُﻦَّ ﻭَﻛَﺴَﺎﻫُﻦَّ ﻣِﻦْ
ﺟِﺪَﺗِﻪِ ﻛُﻦَّ ﻟَﻪُ ﺣِﺠَﺎﺑًﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ
ওকবা ইবনু আমের (রা.)
বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যার তিনটি কন্যা সন্তান থাকবে সে যদি তাদের ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করে এবং নিজের
সামর্থ্যানুযায়ী তাদের খাদ্য প্রদান করে, পান করার ব্যবস্থা করে এবং তাদের পোশাক পরিধান করায়, তাহলে তারা ক্বিয়ামতের দিন তার জন্য জাহান্নাম হতে অন্তরাল হবে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৬৬৯, ছহীহাহ হা/২৯৪)।
ﻋَﻦِ
ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﺭَﺟُﻞٍ
ﺗُﺪْﺭِﻙُ ﻟَﻪُ ﺍﺑْﻨَﺘَﺎﻥِ ﻓَﻴُﺤْﺴِﻦُ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻤَﺎ ﻣَﺎ ﺻَﺤِﺒَﺘَﺎﻩُ ﺃَﻭْ
ﺻَﺤِﺒَﻬُﻤَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﺩْﺧَﻠَﺘَﺎﻩُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ
ইবনু আববাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, ‘যে কোন মুসলমান ব্যক্তির দু’জন কন্যা হবে, সে তাদের ভালভাবে রক্ষণাহেবণ করবে যতদিন তারা দু’জন তার কাছে থাকবে, তাহলে তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৬৭০)।