Search This Blog

My Blog List

19.1.18

আমরা অনেক পাপ কাজ করি কিন্তু আমরা জানি এই কাজটি পাপের । কাজটি করলে আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিবেন, তবুও করি কেনো করি?

আমরা অনেক পাপ কাজ করি কিন্তু আমরা জানি এই কাজটি পাপের । কাজটি করলে আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিবেন, তবুও করি কেনো করি?
!!!!সম্মানিত  পাঠোক গোন!!!!
আল্লাহ বলেন-

الَّذِينَ يَسْتَمِعُونَ الْقَوْلَ فَيَتَّبِعُونَ أَحْسَنَهُ ۚ أُولَٰئِكَ الَّذِينَ هَدَاهُمُ اللَّهُ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمْ أُولُو الْأَلْبَابِ

যারা মনোযোগ সহকারে কথা শোনে অতঃপর তার মধ্যে যা উত্তম তা অনুসরণ করে তাদেরকেই আল্লাহ হিদায়াত দান করেন আর তারাই বুদ্ধিমান। (সূরা, যুমার,৩৯:-১৮)
আমরা আল্লাহর বান্দা আল্লাহকে যখন আমরা ভয় করতে শিক্ষব, তখনি আমরা আল্লাহর দেয়া বিধি বিধানকে আমাদের জিবনে বাস্তবায়ন করতে বাধ্য থাকিব
আশোলে আল্লাহ তা'আলার ভয় ভিতি নেইএই জন্য আমরা অনেক মানুষের মদ্ধো হতে অল্প সংখ্যক লোক মসজিদে আসি এবং স্বলাত আদায় করিকিন্তু কেউ বলতে পারবো না যে আমরা আল্লাহর দেয়া  বিধানকে সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করিএকথা আমাদের বলার উপায় নাই কেন নাইএকটি মাত্র কারণ সেটাহল আল্লাহর ভয় আমাদের ভিতরে  নেই
কোন বিষয়কে মানুষ তখনই ভয় করে যখন তাকে বুঝে এবং চিনে, তার  প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকে, এবং জেলখানার শাস্তি সম্পর্কে বুঝেআর যা তিনি বলবেন তাই তিনি করবেন
আমাদের ভিতরে আল্লাহ সেই পরিচিতি ও নেই  এবং ভয়ের মতো ভয় নেই এইজন্যে  আল্লাহ বলেন...
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করার মত ভয় কর। (সূরা, আল-ইমরান ৩:-১০২)
যেই ভয়ে গোনা গারকে বা  অপরাধীকে তার গোনাহর কাজ থেকে  ফিরিয়েনিতে সক্ষম, এই ভইটির নামহল (حَقَّ تُقَاتِه) ভয় করার মত ভয়করা
নির্জনে একটা কাজ সম্পাদন করবে কেউ তাকে দেখে না কেউ বুঝতেও পারবেনা, কাজটি তার অনেক উপকার সাধন করবে কিন্তু এ কাজটি আল্লাহ পছন্দো করেনআল্লাহ এটাকে নিষেধ করেছেন, একমাত্র এই ভয়ে সে ফিরে আসল
এই ভইটির নামহল (حَقَّ تُقَاتِه) ভয় করার মত ভয়করা
আল্লাহ বলেন..
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُضَاعَفَةً ۖ    "وَاتَّقُوا اللَّهَ"    لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে মুমিনগণ! তোমরা সুদ খেও না ক্রমবর্ধিতভাবে, "আল্লাহকে ভয় কর" যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা, আল-ইমরান ৩:-১৩০)
"আল্লাহকে ভয় কর"  "وَاتَّقُوا اللَّه"
আল্লাহকে ভয় করা অর্থ হল আল্লাহর আজাবকে, শাস্তিকে, গজবকে, ভয়করাআল্লাহর সত্তাকে ভয় করে কি হবেআল্লাহর প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে ভয় করতুমি অপরাধ করলে তোমার জন্য যে শাস্তি ধরা আছে সেই শাস্তিকে ভয় করএর নাম হচ্ছে  "وَاتَّقُوا اللَّه" আল্লাহকে ভয় করা
যেমন আল্লাহবলেন...
وَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ
ভয় কর সেই আগুনকে, যা কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে  (সূরা, আল-ইমরান ৩:-১৩১)
ইবনু  তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন..
অর্থাৎ  তাক্বওয়া ( আল্লাহভীতি) হচ্ছে আল্লাহ যা আদেশ করেছেন তা প্রতিপালন করা এবং যা নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করা
( মুহাম্মাদ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ, আত-তাক্বওয়া (জেদ্দাহ : মাজমূ'আহ যাত, ১৪৩০ হিঃ) পৃঃ ৭।)
আবুদাউদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন..
তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি হচ্ছে যা আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন বিষয় থেকে পরিপূর্ণ ভাবে বেঁচে থাকা। ( তাফসীরে আবী সঊদ, ১/২৭ পৃঃ
আল্লাহ বলেন...
وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
আল্লাহকে ভয় কর যাঁর কাছে তোমাদেরকে একত্রিত করা হবে। (সূরা, মায়েদা, ৫:-৯৬)
তিনি আরো বলেন...
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَا قَدَّمَتْ لِغَدٍ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করপ্রত্যেকেই চিন্তা করে দেখুক, আগামীকালের জন্য সে কী (পুণ্য কাজ) অগ্রিম পাঠিয়েছেআর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে পুরোপুরি খবর রাখেন। (সূরা, হাশর ৫৯:-১৮)
আল্লাহর প্রশাসনিক ব্যবস্থা
আল্লাহর প্রশাসনিক ব্যবস্থা দেখুন 
এই দেহের অঙ্গ, প্রতঙ্গ হাত, পা, চক্ষু, কান, চামড়া এগুলোকে আমরা অনেক ভাল বাসি অনেক যত্ন করি আর এগিলো নিয়ে আমরা গর্ব করি
এগুলি আমাদের নয় এগুলি আল্লাহ রব্বুল আলামীনের সাক্ষীকিয়ামতের মাঠে  এগুলি আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী পেস করবে
রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন...
আবূ বাকর ইবনু আন নাযর ইবনু আবূ আন্‌ নাযর (রহঃ) ..... আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিততিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলামএ সময় তিনি হেসে বললেন, তোমরা কি জান, আমি কেন হাসলাম? আমরা বললাম, এ সম্পর্কে আল্লাহ ও তার রসূলই ভাল জানেনঅতঃপর তিনি বললেন, বান্দা তার তদীয় রবের সঙ্গে যে কথা বলবে, এজন্য হাসলামবান্দা বলবে, হে আমার পালনকর্তা! তুমি কি আশ্রয় দাওনি আমাকে অত্যাচার হতে? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তাআলা বলবেন, হ্যাঁ আমি কারো প্রতি অত্যাচার করি নাএরপর বান্দা বলবে, আমি আমার ব্যাপারে স্বীয় সাক্ষ্য ছাড়া অন্য কারো সাক্ষী হওয়াকে বৈধ মনে করি নাতখন মহান আল্লাহ বলবেন, আজ তুমি নিজেই তোমার সাক্ষী হওয়ার জন্য যথেষ্ট এবং সম্মানিত কিরামান কাতিবীন (লিপিকারবৃন্দও) যথেষ্টতারপর বান্দার জবান বন্ধ করে দেয়া হবে এবং তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে নির্দেশ দেয়া হবে যে, তোমরা বলোতারা তার আমাল সম্পর্কে বলবেতারপর বান্দাকে কথা বলার অনুমতি দেয়া হবেতখন বান্দা তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে উদ্দেশ্য করে বলবে, অভিসম্পাত তোমাদের প্রতি, তোমরা দূর হয়ে যাওআমি তো তোমাদের জন্যই বিবাদ করছিলাম। ( সহীহ মুসলিম, হাদিস একাডেমী হা/ ৭৩২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন হা/ ৭১৭০, ইসলামিক সেন্টার হা/ ৭২২৩,)
আল্লাহ বলেন..
حَتَّىٰ إِذَا مَا جَاءُوهَا شَهِدَ عَلَيْهِمْ سَمْعُهُمْ وَأَبْصَارُهُمْ وَجُلُودُهُمْ بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
অর্থঃ- শেষ পর্যন্ত যখন তারা জাহান্নামের নিকটে পৌঁছবে, তখন তারা যা করত সে সম্পর্কে তাদের কান, তাদের চোখ আর তাদের চামড়া তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। (সূরা, হামিম সাজদা, ৪১:-২০)
তিনি আরো বলেন...
الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَىٰ أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
অর্থঃ- আজ আমি তাদের মুখে সীল মোহর লাগিয়ে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে, আর তারা যা করত সে সম্পর্কে তাদের পাগুলো সাক্ষ্য দেবে। (সূরা, ইয়া সিন, ৩৬:- ৬৫)
সম্মানিত পাঠোক গোন উক্ত আয়াত থেকে বুঝাগেল  আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে আমাদের চোখ, কানহাত, পা  এবং চামড়া  চোখ কে ছেড়ে অগোচরে আমরা কি কিছু করতে পারবোআমরা কি এমন কিছু করতে পারব যে আমার চোখ, কান, হাত, পা এবং চামড়া জানতে পারবে না
আল্লাহ বলেন...
فَإِنْ يَصْبِرُوا فَالنَّارُ مَثْوًى لَهُمْ ۖ وَإِنْ يَسْتَعْتِبُوا فَمَا هُمْ مِنَ الْمُعْتَبِينَ
এখন যদি তারা ধৈর্য ধারণ করে তবুও জাহান্নামই হবে তাদের আবাস, আর যদি তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে তবুও তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে না
(সূরা, হামিম সাজদা, ৪১:-২৪)
অপকর্ম থেকে বেচে থাকার উপায়
(১) সম্মানিত পাঠোক... তুমি যেই অফিসে অবস্থান করছো সেখানকার অবস্থান সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছেপ্রত্যেকের গতিবিধি লক্ষ্য করা হচ্ছেতখন সেখানে তুমি কেমন সর্তকতা অবলম্বন করতখন তো তুমি নিজেকে এমন কাজ থেকে বিরত রাখ যে কাজের কারণে তোমাকে অপরের কাছে লজ্জিত হতে হবে, জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবেহে ক্ষনিকের মুসাফির যে মহানরব তোমাকে সৃষ্টি করেছেন তিনি তোমার প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করছেন, প্রতিটি শব্দ প্রতিটি উচ্চারণ সুস্পষ্ট ভাবে শুনছেন  সেই মহান রবের কাছে জবাবদিহিতার ব্যাপারে তুমি কতটুকু সতর্কতা অবলম্বন করছ  তোমার জীবনের একটি মুহূর্ত ওকি এমন অতিবাহিত হয়েছে যা তোমার রবের নিকট সংরক্ষিত নেইআর তোমার জীবনের একটি মুহূর্ত কি এমন অতিবাহিত হবে যা তোমার রবের নিকট সংরক্ষিত থাকবে না   জেনে রেখো তুমি যে কথাই বলছো আরজে শব্দ উচ্চারণ করছে তা অবিকলভাবে সংরক্ষিত হচ্ছেমানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর পহরী তার নিকটেই রয়েছে আজ তুমি যেই মুখ দিয়ে কথা বলেছ কিয়ামতের দিন সেই মুখ বন্ধ করে দেয়া হবেআজ তুমি যে হাত দ্বারা স্পর্শ করছো, যে হাতকে তুমি নিজকাজে ইচ্ছামত ব্যবহার করছো, কালসেই হাত তোমার বিরুদ্ধে কথা বলবেযেই পা দিয়ে আজ তুই জমিনে বিচরণ করে বেড়াচ্ছো, কাল সেই পা তোমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে  হে দুনিয়া মুছাফির আমি তোমাকে সতর্ক করছি, তুমি আপন কৃতকর্মের ব্যাপারে উন্মাদ হয়ে থেকোনাকোথায় দৃষ্টিপাত করছো, কেনো ভাবছো, সবই তোমার রব অবগত আছেন
হে ক্ষনিকের মুসাফির তোমার সেই রবেরকাছে হিসাব দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হওযিনি একমাত্র অদৃশ্যর খবর জানেন
হে ক্ষনিকের মুসাফির তুমি তোমার সেই রবের কাছে হিসাব দেওয়ার ব্যপারে সতর্ক হও  তার অজ্ঞাতসারে একটি গাছের পাতাও ঝরে পড়ে নাযিনি সবকিছুই দেখছেন কোন দৃষ্টি তাকে দেখতে পাইনা কিন্তু তিনি সবকিছুই দেখছেন
(২)  আমরা খারাপ কিছু  ( মোবাইলে গান-বাজনা খারাপ মুভি ভিডিও)  দেখব না দেখলেই আমার এই চোখ আল্লাহকে বলে দিবে
(৩) আমি খারাপ কিছু  ( গান বাজনা বাদ্যযন্ত্র, কারো দুর্নাম গীবত,) শুনব না, শুনলেই আমার এই কান আল্লাহকে বলে দিবে
(৪) আমার হাত দিয়ে কোন অপকর্ম করব নাকরলেই আমার এই হাত আল্লাহকে বলেদিবে
(৫) আমি কোনো খারাপ কাজে অগ্রসর হবো না হলেই আমার এই পা আল্লাহকে বলে দিবে  ইত্যদি... এই কথাগুলি সর্বদা মনে রাখলে আমরা এ থেকে বিরত থাকতে পারবো ইংশাআল্লাহ
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً ۚ إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
হে আমাদের প্রতিপালক! সৎ পথ প্রদর্শনের পরে তুমি আমাদের অন্তরগুলোকে বক্র করে দিও না, আমাদেরকে তোমার নিকট হতে রহমত প্রদান কর, মূলতঃ তুমিই মহান দাতা। (সূরা, আল-ইমরান ৩:- ৮)
আল্লাহ যেন আমাদের সরল সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন আমীন শুম্মা আমীন